Sunday, September 27, 2009

ঙ. পঁচিশোত্তরীয় বাঙলা কবিতা

এক
তবে যাই বিন্দু বিন্দু পঁচিশোত্তরীয়
পথিমধ্যে পাঠ্য জল... জল-বায়ুবীয়
যেমন আমার কথা- এসে যায় কী বা
যদি বলি যে শ্মশানে রেখেছি প্রতিভা...

কী আশ্চর্য আয়নায় আমি বিসদৃশে
আমাকেই দেখি আর অধিরূঢ় বিষে
মনে হয় ভালো লাগে- আহা ভালোবাসা
আপন চরণে ধুলো... ধুলোতেই আশা...

সকলি আমার গান- অবিমৃশ্র কথা
আমি যে ঘুমিয়ে থাকি প্রকাশিত যথা;
তবে কি রহস্য ঘুমেই? নিদ্রাদেবী জানে
আমি যে জাগ্রত নহি- অন্য অভিমানে...
অর্থাৎ ঘুমিয়ে চলি- ঘুমিয়ে দাঁড়াই
জন্মাবধি বাস করি নিষিদ্ধ পাড়ায়
এসব লঘুতা বটে! ল. সা. গু'তে ভুল
গ. সা. গু'তে অধিকন্তু মহা হুলুস্থূল...

তবু এই বিন্দু বিন্দু ঘাসের শিশিরে
চুরি যাওয়া পুকুরকে পাওয়া যায় ফিরে-
এইসব দেখি আর না দেখি অধিক
অন্তরনগর ট্রেন চলে ঝিক ঝিক...

দুই
যে সব পুরনো গল্প... অদ্য আধুনিকে
যেনো বা তারা মেটামরফসিস শিখে
এতোদিনে দাঁড়িয়েছে... নিউ প্রোফাইল...
বলো তবে প্রত্নসুন্দরী, কোথায় ছিলে
এতাকাল? গুপ্তপাথরে? পুরস্থাপত্যে?
কী রকম মৃতুঘুম... চিতায় না চৈত্যে
শুয়ে শুয়ে খেয়েছো প্রবাহ- আর তাই
একটি অনাদি গল্পে তোমার কথাই...

আর এই কম্পিত মোর দুইটি হাত
একটি সোনার কাঠি অন্যটি রূপোর...
অতএব আমি যেনো তোমার শিয়রে
হাত দুটি রাখিয়াছি বাল্মীকির ঘোরে-
তবু রচিবো না কিছু... অনুক্ত প্রার্থনা
এই- ভস্ম হতে সাধ হয়... আ মরি দ্যোতনা
আর এই মহোৎসব- মাধুর্য সকলি
আমি কিছু চাহিবো না বৃথা অন্তর্জলি...
শুধু এই সান্দ্রসাধ- পঁচিশোত্তরীয়
জীবন আমার... প্রাপণে অঙ্গারপ্রিয়...

অগ্নিমন্ত কন্যা তুমি চক্ষু মেলে চাও
চন্দন এসেছি ছুঁয়ে- ভস্ম করে দাও

তিন
পঁচিশোত্তরীয় পৃথিবীর ইতিহাসে
এই বাক্য কী এমন অর্থ নিয়ে আসে?
আমি তার কিছুই জানি না তবু সাধ
হয় লিখে যাই হয়তোবা বিসংবাদ...

আর এই অ্যাভেনিউ অ্যাশফ্যাল্ট স্ট্রীটে
যেন ধুলো নেই- তবু যাই হেঁটে হেঁটে
তবু পথিক হতে পারবো না, হায় এই মনো-
জাগতিক জ্যামিতির খসড়া নন্দন,
আমি তবে কান্তি আর চেয়েছি ক্রন্দন?

তবু এই আত্মপ্রভ- এই তমোহর
অন্বর্থ সকাশে দেখি ঝাঁপসা-মিরর...
এইভাবে বাস করি কুয়াশাপ্রবণ
আমি আর আমি ভাই অবৈধ দুজন...

দিগন্তের নীল মেয়ে আমাদেরই মা
পাখিয়া বোনের স্মৃতি মনেই পড়ে না-
এই যেনো ইতিহাস- পিতৃত্বরহিত
শেষরাতে তারাগণ দগ্ধ- ফণায়িত...

কোন দিকে যাও পন্থ... কতো দূরে যাও
এইবার আমাকেও পান্থ করে নাও

চার
কবিতা লিখেছি বটে! না লিখেছি আরো
আমার স্মারক থেকে অদৃশ্যত তারও
বেশি আমি বাস করে যাই পৃথিবীতে-
গভীর মৌনতা মাখি মুখর সঙ্গীতে...

এইখানে আছি তবু দূর বহুদূর
যেমতি মৃত্যুর আগেই মরেছি প্রচুর-
আমি এই মর্ম থেকে কুড়াই মহিমা
আঙুলে নির্ণয়ে করি অপার অসীমা...
তবু এই নিসর্গের অঝোর-ভৈরবী
আমি যাই অন্তরীক্ষ- গোপনীয় কবি...

কবিতা লিখেছি বটে! কবিতা কি লিখি
পূর্ণিমায় পুড়ে গেছে শতাব্দীর সিঁকি-
অনূন্য সংবেদে আহা আছি ও শাশ্বতী
আমাকে সুদূরে রেখে সান্দ্র বৃহস্পতি
ভেসে গেলো... ভাসমান... মেঘের বাড়িতে
যদি যাই- তৃষ্ণাতুর... সন্ত-প্রবাহিতে...

আর ওই জোনাকির আলো নিভে গেলে
অরণ্যের অন্ধকারে আমাকেই জ্বেলে
দেবো সমূহ সন্তাপে... আহা অন্তঃচিতা
এই আমার জীবন! আশ্চর্য কবিতা!!

No comments:

Post a Comment