Monday, October 5, 2009

খ. শত সপ্তাহের পদাবলী

সোমবার
কাব্যকলা ক্যামন সুস্বাদু- এই নিয়ে অবারিত
আলো ঘনীভূত হলো যোগিনীপাড়ার মাঠে!
দুদশ বাড়ির ছোটরা সবাই বিশেষ তাড়িত-
এই স্মিতে কলা বিক্রি করি মেঘশিমুলের হাটে!


আজ বেশ সোমবার যেনো শাদা শাদা প্যাপিরাস
তাই অন্তরঙ্গ রোদ-গন্ধে ভাসে বিকল্প মৈথুন!
কোথায় কবিতা আর কাব্যময়ী গণিকার শ্বাস
আমি কি খাবো ও সুব্রত- সোমরস না তোর ধুন?


সোম কি মাহেদ্র সুহৃদ না কোনো মনীষার দেশ
কেন এই অধিরূঢ় অর্থহীন জলের আল্পনা
সোমবার কেন্দ্রে রেখে?
পৃথিবীতে বহু সোমবার ছিলো- আরো যায় শোনা
কোনোদিন সোমবার আসে নাই- অথবা বিশেষ
সপ্তাহান্তে সোম... শূন্য বা একাকী...
বংশলুপ্ত করে দেয় অবশিষ্ট ডোডো পাখি


মঙ্গলবার
মঙ্গলবার মাত্রই আমার জন্মদিনের রোদে
অসামান্য প্রাতকল্প: কিছু প্রিয় পাখি উড়ে যায়
সেই শারদ প্রান্তরে- দৃশ্যত রয়েছে কী প্রবোধে
একটি মাছির কথা মনে পড়ে- ডানার দোহাই!


স্পষ্ট হলো ডানা ভালোবাসি! ডানাচর্চা কতদূর
হয়ে গ্যালো পৃথিবীতে... তবু অসমাপ্ত পর্যটন
ও ফরিদ চলো যাই ফলের হৃদয়-সমুদ্দুর
আর আমাদের পাঠ্য করে নিই প্রধুমিত যে ভ্রমণ!


আজ মঙ্গলের দিন- মঙ্গলবার নদীতীর দেশে
আমি কী রেখে এসেছি কোনো কালো যুবতীর জ্বরে!
অনুব্রজা সেই জ্বর-
আরো কিছু আর্দ্রধ্বনি কবিতায় গেঁথে গেঁথে শেষে
মঙ্গলে জন্মের কথা ভেবে আকস্মিক মনে পড়ে
মনে পড়ে কী অদ্ভুত... হায়
জন্মেই নারীস্বাদে বিস্মিত- এখন বিস্মৃতপ্রায়...


বুধবার
আমার পিঠে যে জন্মেছে সংসারে সেইদিন বুধ-
বার ছিলো কী কারণে- এই সত্য গভীর অচেনা।
তবু আজ এতোদিন পর আশ্চর্য আর অদ্ভুত
এসে বলে গ্যালো- অনেক বুঝেও তুমি বুঝবে না!


আমাদের মধুপুরে আমি আর অ্যাবস্টাক্ট বোন
নদীবর্তী ধানীমাঠে উড়িয়েছি আমাদের ছায়া!
এইসব শব্দপাতে অদৃশ্যত রয়েছে যে টোন
বেদনা আমার বোন- যেমন ফেলে আসার মায়া...


বুধবারে এইভাবে বৃষ্টিনামে আমাদের ঘরে-
বিশেষণে চলে যায় বোন... হায় অ্যাবস্ট্রাক্টশন...
কি বুঝি বুঝি না কিছু-
বোনের বিভ্রম প্রাণে বোধি-শিলা কখনো কি ঝরে
কী আশ্চর্য কী অদ্ভুত! ও জহির এই বিলোচন
হয়তবা কিছু নয়- তবে
প্রতিদিন বুধবার হয়ে গেলে কী রকম হবে...


বৃহস্পতিবার
অসামান্য বৃহস্পতিকে কী সামান্য একটি দিন
বলা যায়- আমাদের ছোটো মুখে প্রমিতি অনেক!
তবু ভাবি, আজ এই দিন সপ্রতিভ সমীচীন
অস্পৃশ্য দরোজা ভেঙে আসে শূদ্রচ্ছিন্ন অভিষেক!


বৃহস্পতিবার- কারো কারো করতলে মনোনীত!
অব্যয় আকাশ ভূর্জপত্র ভেবে করি বিরচনঃ
এই ব্রাত্য প্রাত্যহিকী- প্রাতিস্বিকে আমরা প্রাকৃত
অভিজ্ঞানে, স্বপ্নে- অনির্বচনীয় কমলাপ্রবণ...


কমলার রূপকথা সারা হলে অন্য কথা বলি-
একবার খুব বৃষ্টি হয়ে নেমেছিলো বৃহস্পতি;
বৃষ্টির অর্থ বিধি-
মেঘদেশ হতে পারে অন্বর্থ আমার অন্তর্জলি!
অসামান্য এইসব অন্তর্বর্তী ঐচ্ছিক প্রগতি
নিসর্গে প্রদান সারাৎসারে-
আমাদের ছোটোমুখ বড়ো হয় বৃহস্পতিবার...


শুক্রবার
উপাখ্যান প্রস্তুত হয়েছে! এইবার ঘরে ঘরে
মধ্যাহ্ন কীর্তন হবে! দিন ধার্য করি শুক্রবার!
আর শুকনো পাতায় প্রচারণা পৌঁছুবে প্রান্তরে-
অসামান্য শিশুসূচি- নান্দীপাঠে জলের পাহাড়...


জল থই থই জলের পাহাড় ভাসে উপাখ্যান!
ও শাহেদ- সেই জুজু-পৌরুষ দৃশ্যত এক পাখি...
শুক্রবারে আজ আমাদের চোখের পাতায় গান
ডিমের ভিতরে আজন্মকাল তবে কি আর থাকি?


শিশুলীন হয়েছি যখন! আসন্ন পার্বণে আয়
আত্মনাশ করি একে একে! প্রগত প্লাবন... ঢেউ
ভেঙে যে নদী বিস্মৃত-
শুক্রবারে আমাদের দাবী- প্রাকৃতিক প্রার্থনায়
আকণ্ঠ অঙ্গার নিয়ে কালপূর্ণিমায়- কেউ কেউ
অবিমিশ্র শীতকুয়াশায়
শিশু তোরা থাক! মোরা ডোডোমির গল্প হয়ে যাই...


শনিবার
কবে সংসার থেকে পালিয়ে গিয়েছিলো শনিবার
তবু অশনি গ্যালো না- প্রবীণ পাড়ায় জাগে ধ্বনি!
তবু হায় যেমতি শৈশব কুয়াশাপ্রবণ- আর
সেই আমার সকাশে সাধু বান্ধব শ্রীযুক্ত শনি!


শনিবারে যাহা পাঠ্যবিষয়ক -প্রত্নপাঠ্যসূচি
ঘরের উঠোন- জনান্তিকে বা পাখিদের প্রান্তরে...
প্রপিতাগণের অসম আবহে আকণ্ঠ অরুচি-
বাস করি আজ ইউক্যালিপ্টাসের ঘরে!


পুনর্বার শনিকথা ছেড়ে দিই পাঠকের ঠোঁটে...
যেমতি জীবন দাশ আমাদের অধুনা পুরাণ!
কয়েক সপ্তাহ পর
এই ষষ্টক লিখছি- এই অর্থে অন্য শব্দ ফোটে
কবিতার ঢেউ ভেঙে শনিবারে- কোথাও যে বাজে অর্গান
যা ঝরাপাতাদের গ্রন্থনা...
আদিত্য রে- আমি ক্যানো তবে পাতা হতে পারবো না...


রবিবার
অধিরূঢ় এমন রোদ্দুর! কতো মেঘ জমে ওঠে!!
আজ পূর্ণদৈর্ঘ্য দিন! ক্রুশকল্প... ঘণ্টাধ্বনি- আর
বিসদৃশে কিঝু কথা... কথাগুলো নির্লিপ্ত... প্রস্ফূটে
তবু যা উদ্ভুত- অতিক্রান্ত অর্থে আসে রবিবার!


যেমন আমি- এলদোরাদোয় যাবো বলে একাকী
কাগজের নৌকা বানাই- অগোচরে দুজন চড়ি...
ও রূপম- আজ রোদ্দুরে ও দূরে যে রকম থাকি
পায়ের প্রতিভা নিয়ে অভিমান প্রযোজনা করি...


এইসব রবিবারে আরো কিছু কথা (ছিলো) থাকে!
ঠাকুরের গানে হৃদয় ব্যাকুল (হৃদয় কোথায়)
যতোদূর চোখ যায়-
শনৈঃ শনৈঃ আমাকেই রেখে যাই অনিকেত বাঁকে
শাদা শাদা বিস্মরণে অনুস্মৃত হয়েছি প্রজ্ঞায়
আহা স্মৃতিদিগ্ধ দৃশ্যাবলী...
রবিবারে মন্দ্রস্বরে ঘাস-মাটি-পাথরকে বলি...

No comments:

Post a Comment